১৭ এপ্রিল- ‘বিমান দুর্ঘটনায় মারা যাননি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু৷ তাঁকে হত্যা করা হয়েছিল’, এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন একদা নেতাজির দেহরক্ষী তথা আজাদ হিন্দ ফৌজের প্রাক্তন সেনা জগরাম যাদব(৯৩)। শুধু তাই নয়, নেতাজির মৃত্যুর জন্য পরোক্ষে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুকে দায়ী করেছেন তিনি। প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহেই আইবি-র কিছু নথি থেকে নেতাজির পরিবারের উপর নেহেরুর নজরদারির বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। যা নিয়ে বিশ্ব জুড়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়। এক সাক্ষাৎকারে জগরাম যাদব দাবি করেছেন, ‘নেতাজিকে নিয়ে সমস্যায় ছিলেন নেহেরু’৷ এ প্রসঙ্গে ১৯৪৫ সালের চট্টগ্রাম জেলে থাকাকালীন এক অভিজ্ঞতার কথা জানাতে গিয়ে জগরাম জানান, ‘চট্টগ্রাম জেলে থাকাকালীন আমরা খবর পাই, যে বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যু হয়েছে। তবে আমরা নিশ্চিত ছিলাম যে নেতাজি বেঁচে আছেন। কারণ, নেতাজি একসময়ে আমাদের জানিয়েছিলেন, যে বিভ্রান্তি ছড়াতে তাঁর মৃত্যু নিয়ে গুজব রটানো হতে পারে’৷ আর ঠিক সেটাই হয়েছে৷
জগরাম যাদব আরও জানিয়েছেন, ‘সুভাষের জনপ্রিয়তা ও জনমানসে গ্রহণযোগ্যতা যে নিজের তুলনায় অনেক বেশি তা বুঝতে পেরেছিলেন নেহেরু৷ তাই নেতাজিকে খুন করতে পিছপা হন নি’। এছাড়াও নেতাজির প্রাক্তন দেহরক্ষীর দাবি, ‘১৯৪৯ সালে চিনের স্বাধীনতার পর চিনে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসে যান এক দূত৷ তিনি জানান, নেতাজি রাশিয়াতে রয়েছেন এবং দেশে ফিরতে চান। রাষ্ট্রদূত কে এম পানিকরের অনুপস্থিতিতে এই খবর জানতে পারেন সেনাবাহিনীর আইনজীবী ব্রিজ ঠক্কর। খবর শুনে উৎফুল্ল ঠক্কর প্রথমেই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নেহেরুকে তা জানান। চিন থেকে ভারতে আসা পরের বিমানেই ঠক্করকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। কারণ হিসেবে বলা হয়, ওই কাজের জন্য ব্রিজ ঠক্কর যোগ্য নন’৷
৯৩ বছরের জগরাম যাদবের মতে, ‘তাঁর মতো অনেকেই এ কথা বিশ্বাস করেন যে নেতাজিকে খুন করা হয়েছিল’ তবে নেতাজির পরিবারের উপর নেহেরুর নজরদারি ইস্যুতে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তিনি। ১৯৪৩-৪৪ সালে প্রায় ১৩ মাস নেতাজির দেহরক্ষী ছিলেন জগরাম। ১৯৪৬ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ব্রিটিশ সরকার যাদবকে বরখাস্ত করে৷ এরপর তিনি ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মিতে যোগ দেন৷ পাঁচ থেকে ছ’বছর সেনাবাহিনীতে চাকরি করেন৷ এবং মাসে ২৫ টাকা করে মাইনা পেতেন৷ তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর হয়ে লড়াই করেন৷
deshebideshe.com
No comments:
Post a Comment